বিনোদন ডেস্ক:
অনেকেই হয়তো জানেন না নায়ক রাজ্জাকের ‘নায়করাজ’ উপাধিটি কীভাবে এলো। কেমন করে তিনি হলেন নায়করাজ। তিনি কী নায়কদের রাজা ছিলেন? এই প্রশ্নের উত্তর নায়করাজ রাজ্জাকের ভাষাতেই জানা যাক।

খুব বেশিদিন আগের কথা কিন্তু নয়। চলতি বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি তার ৭৬তম জন্মদিনে সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন তার প্রিয় মানুষদের তালিকায় আছেন জহির রায়হান। ছিলেন আরো একজন। প্রখ্যাত চলচ্চিত্র সাংবাদিক আহমদ জামান চৌধুরী। যাকে সবাই খোকাভাই নামেই চেনেন।

খোকাভাইয়ের সঙ্গে দারুণ সম্পর্ক ছিল রাজ্জাকের। তার নায়করাজ উপাধিটিও খোকাভাইয়ের দেয়া। রাজ্জাকের স্মৃতিচারণে উঠে এসেছিল আজাচৌয়ের গল্পও। শুধু তাই নয়, বলতে গিয়ে বাচ্চাদের মতো কেঁদেও ফেলেছিলেন তিনি কৃতজ্ঞতায়।

রাজ্জাক বলেছিলেন, ‘আমার জীবনের সবচেয়ে বড় বন্ধু, সবচেয়ে বড় শত্রু খোকাভাই। ওর সঙ্গে কথাকাটাকাটিই নয়, মারামারি পর্যন্ত হয়েছে আমার। তবুও আমার প্রাণের বন্ধু সেই। যখনই মন খারাপ হয়েছে তাকে ডেকেছি। সেও আসত। দুজনে অনেক সময় কাটিয়েছি।

আমার যে নায়করাজ উপাধি সেটিও ও দিয়েছিল। জিজ্ঞেস করলাম এই উপাধি কেন? উত্তর দিল- উত্তমকুমার যদি ওপার বাংলার মহানায়ক হতে পারে তুমিও আমাদের নায়করাজ। আমার বন্ধু আজ আর নেই। আল্লাহ তাকে বেহেশত দান করুক।’

চলচ্চিত্র সাংবাদিকতার কিংবদন্তি প্রখ্যাত চলচ্চিত্র সাংবাদিক আহমদ জামান চৌধুরী। চলচ্চিত্রকে তিনি ভালোবেসেছিলেন হৃদয় থেকে। ভাবতেন, বলতেন, লিখতেন- চলচ্চিত্র নিয়েই। শুধু তাই নয়, চলচ্চিত্রের প্রতি অগাধ ভালোবাসার কারণেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতাকে ছেড়ে চলচ্চিত্র সাংবাদিকতায় যোগ দেন।

তাই তিনি রুপালি পর্দার বাইরে এই অঙ্গনের সবচেয়ে প্রিয় মুখ হিসেবেই পরিচিত ছিলেন। সাংবাদিকরাও যে চলচ্চিত্রের প্রাণপুরুষ হতে পারেন তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত তিনিই রেখে গেছেন। কারও কাছে খোকা জামান, কারও কাছে খোকাভাই আবার কারও কারও কাছে আজাচৌ নামে পরিচিত।

বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের গোড়াপত্তনের আগে চলচ্চিত্রবিষয়ক পত্রিকা ‘সিনেমা’ প্রকাশ করে রীতিমতো বিস্ময়ের সৃষ্টি করেছিলেন প্রয়াত ফজলুল হক (সাহিত্যিক ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ফরিদুর রেজা সাগরের বাবা)। তারই দেখানো পথ ধরে সৈয়দ মোহাম্মদ পারভেজ প্রকাশ করেন ‘চিত্রালী’। বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্পের জন্য চিত্রালী হয়ে ওঠে আদর্শ। চিত্রালীকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়ে এসএম পারভেজের হাতকে শক্তিশালী করেন আহমদ জামান চৌধুরী।

অর্থাৎ খোকাভাইয়ের সাংবাদিকতা শুরু জনপ্রিয় সিনেমা পত্রিকা ‘চিত্রালী’র মাধ্যমে ১৯৭০ সালে। এরপর নানা দায়িত্ব পালন শেষে পত্রিকাটির সম্পাদনার দায়িত্বও পালন করেন দীর্ঘ ১০ বছর। সব মিলিয়ে চিত্রালীর সঙ্গে তিনি সম্পৃক্ত ছিলেন দীর্ঘ ২০ বছর। চিত্রালীর পর তিনি দু’বছর ফিচার এডিটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন দৈনিক যুগান্তর পত্রিকায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়েও ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া বিষয়ের ওপর পাঠদান করেছেন।